আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের হাতে গোনা কয়েক দিন রয়েছে। মার্কিনআসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের হাতে গোনা কয়েক দিন রয়েছে। মার্কিনরা আগামী ৫ নভেম্বর পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে ভোট দিতে যাবেন। জুলাইয়ের আগে সমীকরণ ছিল ভিন্ন। তখন নির্বাচনের লড়াইয়ে ছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু জুলাইয়ে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়ান বাইডেন। তখন ডেমোক্র্যাট থেকে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে এবারের নির্বাচনের বড় প্রশ্ন—যুক্তরাষ্ট্র কি প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পেতে যাচ্ছে? নাকি শুরু হবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ? নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে। প্রচারণা ও জনপ্রিয়তায় কে এগিয়ে আছেন তা বিবিসির প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।রা আগামী ৫ নভেম্বর পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে ভোট দিতে যাবেন।কমলা হ্যারিস জুলাইয়ের শেষ দিকে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন। এর পর থেকে জাতীয় জরিপগুলোর গড়ে ট্রাম্পের চেয়ে কিছুটা এগিয়েই আছেন হ্যারিস। যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন বিষয়ে মতামত জরিপ বিশ্লেষণ করে এবিসি নিউজ মালিকানাধীন ওয়েবসাইট ফাইভথার্টিএইট। সেখানে সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী দেখা গেছে, জরিপে ৪৮ শতাংশ সমর্থন কমলার এবং ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ ট্রাম্পের।প্রচারণার প্রথম কয়েক সপ্তাহেই সমর্থনে এগিয়ে যান কমলা হ্যারিস। এর পর থেকে অব্যাহত সমর্থনে আগস্টের শেষ নাগাদ ৪ পয়েন্টে এগিয়ে যান তিনি। ১০ সেপ্টেম্বর দুই প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র নির্বাচনী বিতর্ক অনুষ্ঠিত হওয়ার পরও মাসজুড়ে সমর্থনের পয়েন্ট অনেকটাই স্থিতিশীল ছিল। তবে গত কয়েক দিনে তাদের মধ্যে সমর্থনের ব্যবধান অনেকটাই কমে এসেছে। যদিও এ জরিপগুলোর মাধ্যমে বর্তমানে সমর্থনে কে এগিয়ে আছেন তার একটি মোটামুটি ধারণা পাওয়া যায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যেহেতু ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে হয়, তাই হিসাব কিছুটা ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৫০টি রাজ্য রয়েছে। প্রতিটি রাজ্যের জনসংখ্যার ভিত্তিতে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট দেয়া হয়। এর মোট সংখ্যা ৫৩৮ এবং প্রার্থীকে বিজয়ী হওয়ার জন্য পেতে হবে ২৭০ ভোট। দোদুল্যমান কিছু রাজ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা নির্ধারণ করে।
জাতীয় জরিপগুলোর গড় অনুসারে বর্তমানে সাতটি রাজ্য দোদুল্যমান বা ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটসহ এ রাজ্যগুলো হলো উইসকনসিন (১০), নেভাডা (৬), মিশিগান (১৫), পেনসিলভানিয়া (১৯), নর্থ ক্যারোলাইনা (১৬), জর্জিয়া (১৬) ও অ্যারিজোনা (১১)। এসব রাজ্যের মধ্যে ১ পয়েন্ট করে বেশি নিয়ে উইসকনসিন ও মিশিগানে এগিয়ে আছেন কমলা হ্যারিস। অন্যদিকে নেভাডা, পেনসিলভানিয়া ও নর্থ ক্যারোলাইনায় ১ পয়েন্ট করে এবং জর্জিয়া ও অ্যারিজোনায় ২ পয়েন্ট করে বেশি নিয়ে এগিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নির্বাচনী প্রচারণায় নামার পর থেকে কমলা হ্যারিস কিছু রাজ্যে পরিবর্তন আনতে পেরেছেন বটে, কিন্তু জাতীয় জরিপগুলো সব রাজ্যের পুরোপুরি চিত্র প্রতিফলিত করে না। অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, নেভাডা ও নর্থ ক্যারোলাইনায় আগস্টের শুরু থেকে বেশ কয়েকবার লিড হাতবদল হলেও এ মুহূর্তে সবগুলোতেই ট্রাম্প সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। অন্য তিনটি রাজ্য মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে হ্যারিস আগস্টের শুরু থেকে ২ বা ৩ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, পেনসিলভানিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনেক ঘনিয়ে এসেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।
২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পথে ট্রাম্প লাল হয়ে ওঠার আগে এ তিনটি রাজ্যই ডেমোক্র্যাটদের শক্ত ঘাঁটি ছিল।
এ তিন রাজ্যই ২০১৬ সাল পর্যন্ত ঐতিহ্যগতভাবে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। তবে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে সেগুলো রিপাবলিকানদের পক্ষ নেয়। বাইডেন যদিও ২০২০ সালে সেগুলো ফেরত নেন এবং হ্যারিস যদি এ রাজ্যগুলোয় নিজের প্রতিনিধিত্ব তৈরি করতে পারেন তাহলে নির্বাচনে জয়লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে।(মাহবুবুল ইসলাম)