ভয়াবহ রূপ নিয়েছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর লাহোরের বায়ু দূষণ। দূষিত ঘন বায়ুতে ঢেকে গিয়েছে পুরো শহর, এমনকি পাঞ্জাব প্রদেশ। এরই মধ্যে বায়ু দূষণজনিত অসুস্থতায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে প্রায় ৯০০ জন। চিকিৎসা নিতে হয়েছে হাজার হাজার মানুষকে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (আইকিউএয়ার) এ তালিকা প্রকাশ করে থাকে। প্রতিমুহূর্তের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বায়ু কতটুকু নির্মল বা দূষিত হচ্ছে, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দিয়ে আসছে। আর তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানিয়ে থাকে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার প্রকাশিত তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, যার স্কোর ৫৬০। আর ৯৭ স্কোর নিয়ে ৩৫তম অবস্থানে রয়েছে ঢাকা।
বিষাক্ত ঘন ধোঁয়াশা বায়ু পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশকে ঢেকে ফেলেছে। সেখানে বায়ু দূষণের ভয়াবহতা এতই যে, মহাকাশ থেকেও দেখা যাচ্ছে লাহোর তথা পাঞ্জাবের মহাকাশ থেকেও দেখা যাচ্ছে লাহোর।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ুদূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।
নাসা ওয়ার্ল্ড ভিউ থেকে স্যাটেলাইট চিত্র পর্যবেক্ষণের বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।
লাহোরের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি এতটাই চরম হয়েছে যে, রাস্তায় বের হলে চোখে জ্বালাপোড়া ও গলা জ্বলছে। দরজা–জানালা দিয়ে প্রবেশ করা বিষাক্ত কণার ক্ষতির পরিমাণ কমাতে বাড়িতে খুব কম লোকই এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করতে সক্ষম হচ্ছেন।
এছাড়া আক্রান্ত জেলাগুলোতে বড় থেকে শিশুরা হাঁপানি, হৃদরোগ, ফুসফুসের রোগসহ অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতায় ভুগছেন, বিশেষ করে বেশি ভুগতে হচ্ছে শিশুদের।জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ সতর্ক করেছে যে, দূষিত এলাকাগুলোতে ৫ বছরের কম বয়সী ১১ মিলিয়নেরও বেশি শিশু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ।(মাহবুবুল ইসলাম)