প্রথম দিনেই অবৈধ অভিবাসীদের ওপর খড়্গহস্ত হতে চান ট্রাম্প, তালিকায় ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরাও

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর আগামী ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে পা রেখে প্রথম দিনেই তিনি বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশ দিতে যাচ্ছেন। আদেশগুলো হবে মূলত যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে এবং অভিবাসীদের বৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার যে পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিয়েছিলেন, তা বাতিল করা নিয়ে।

এ বিষয়ে জানাশোনা আছে এমন তিনটি সূত্র রয়টার্সকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র বলছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ফলে অতীতে অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ছাড়াই কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা বাড়বে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় অভিবাসন কর্মকর্তাদের। একই সঙ্গে মেক্সিকো সীমান্তে মার্কিন সেনার সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং এই সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের কাজ আবার শুরু হবে।পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে সূত্র জানিয়েছে, বিগত বছরগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রে লাখ লাখ অভিবাসীকে বৈধভাবে প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার মানবিক প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন জো বাইডেন। নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সেই প্রকল্প বাতিল করতে পারেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তাঁদের স্বেচ্ছায় দেশটি ত্যাগ করতে উৎসাহ দেবেন তিনি।ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবিতে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের মধ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। সূত্র জানিয়েছে, এই শিক্ষার্থীসহ যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী তাঁদের ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেছেন, তাঁদের নিজ দেশে ফেরানোর বিষয়টিও অগ্রাধিকার তালিকায় থাকতে পারে।যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালেই দেশটিতে অবৈধভাবে ১ কোটি ১০ লাখ অভিবাসী বসবাস করছিলেন। এত দিনে সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে। নিউইয়র্ক, শিকাগো ও ডেনভারের মতো অনেক শহরে এসব অভিবাসীকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাঁদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা এবং আর্থিক সহায়তা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে এই শহরগুলো।

নির্বাচনে ট্রাম্পের বড় প্রতিশ্রুতি ছিল, এই অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকানো। বাইডেন প্রশাসন বিপুলসংখ্যক অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। তবে বাইডেনের আমলে কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী গ্রেপ্তার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। আর সীমান্তসংক্রান্ত বিধিনিষেধ কঠোর করায় চলতি বছরে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের হার নাটকীয়ভাবে কমেছে।অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ আরও কমাতে চান ট্রাম্প। গত রোববার তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বিভাগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টম হোম্যানকে অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোর দায়িত্ব দেবেন। হোম্যান কট্টর অভিবাসীবিরোধী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত।

নিউইয়র্কভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ১০ লাখের বেশি অবৈধ অভিবাসীকে দেশটি ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ প্রসঙ্গে সোমবার ফক্স নিউজকে টম হোম্যান বলেন, এই মানুষগুলোকে নিজ দেশে ফেরানোয় অগ্রাধিকার দেবেন তিনি।(মোঃ মিছবাহ উদ্দিন)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *