দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত রবিবার ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে নতুন অগ্রগতি হয়েছে। জেজু এয়ারের বিধ্বস্ত বিমানের একটি ব্ল্যাক বক্স থেকে ডেটা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে তদন্তকারীরা। যদিও দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্স থেকে ডেটা পেতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয়।গত রবিবার থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে আসা বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমানটি রানওয়ে ছাড়িয়ে একটি কাঠামোর সঙ্গে ধাক্কা লেগে আগুন ধরে যায়। এতে বিমানের ১৭৯ জন যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে, যা দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে হওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। মাত্র দুইজন ক্রু জীবিত রয়েছেন। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পাখির সঙ্গে ধাক্কা লাগা বা খারাপ আবহাওয়ার ভূমিকা নিয়ে তদন্ত চলছে।
তদন্তকারীরা বিমানের ককপিট ভয়েস রেকর্ডার থেকে ডেটা সংগ্রহ করেছেন এবং তা অডিও ফাইলে রূপান্তরের কাজ চলছে। তবে ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডারটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোগকারী অংশ ছাড়া থাকায় সেটি ডিকোড করতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। এদিকে, তদন্তে সহায়তার জন্য মার্কিন জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ডের কর্মকর্তারাও মুয়ানে পৌঁছেছেন।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৩ থেকে ৭৮ বছর বয়সী যাত্রীরা ছিলেন, যাদের বেশিরভাগই দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক। দুজন থাই নাগরিকও এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মৃতদেহ শনাক্ত করতে ডিএনএ ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষার পাশাপাশি পরিবারের কাছ থেকে লালা নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তবে বুধবার পর্যন্ত সব মৃতদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মক।
নতুন বছরের উদযাপন বাতিল বা সীমিত করা হয়েছে নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে, এবং সাত দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে, জেজু এয়ারের সিইও কিম ইয়ি-বাই জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার শিকার পরিবারগুলোর জন্য জরুরি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা এবং শেষকৃত্যের ব্যয় বহন করবে এয়ারলাইন। যদিও দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত এখনো চলমান, প্রি-ফ্লাইট ইন্সপেকশনে কোনো ত্রুটি ধরা পড়েনি বলে জানান তিনি।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কেবল দক্ষিণ কোরিয়ার নয়, গোটা বিশ্বের বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুত্বকে আবারও তুলে ধরেছে। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি(মোঃ মিছবাহ উদ্দিন)