আমি হাসপাতালে কাতরাচ্ছি, আর হামলাকারীরা জামিন পেয়ে গেল?: ফারুক হাসান

শহিদ মিনারে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নাগরিক সমাবেশে হামলা মামলার আসামিরা জামিন পাওয়ায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হামলার শিকার গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি ও মুখপাত্র ফারুক হাসান।সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার ওপর যারা শহিদ মিনারে হামলা চালিয়েছে তারা কেউই আহত নন কিংবা শিক্ষার্থী নন; তারা পরিষ্কারভাবে সন্ত্রাসী। সরকার এই সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতেও গড়িমসি করছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে যে, এই হামলাকারীদের সঙ্গে তাদের ভালো একটা কানেকশন আছে।
তিনি আরও বলেন, তারা (হামলাকারীরা) আমার কাছে লোক পাঠিয়েছিল আপস করার জন্য, কিন্তু আমি জানিয়েছি ভুলের ক্ষমা হয়, অপরাধের কোনো ক্ষমা হয় না। কিন্তু আমি হাসপাতালে বিছানায় কাতরাচ্ছি, এই অবস্থায় তারা জামিন পেয়ে গেল? এই কি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা? এই রাষ্ট্রের আদৌও সংস্কার হবে?গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, হামলাকারীরা আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা। তাদের কোনো ক্ষমা নেই। যারা তাদের পক্ষ নেবে, গণঅধিকার পরিষদ জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে নামবে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, ফারুক হাসানের ওপর হামলা এবং হামলাকারীদের জামিনের মধ্যে দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয় বিচার বিভাগ এখনো স্বাধীন হয়নি। প্রকাশ্যে দিবালোকে শহিদ মিনারে ফারুক হাসানের ওপর হামলা হয়েছে, সেই হামলার ভিডিও থাকার পরও আসামিদের জামিন দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থা ছিল আওয়ামী লীগ শাসনামলে। তাহলে আর কিসের সংস্কার হলো জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে? ‘আমাদের রক্তের মধ্যে দিয়ে আজকের এই জুলাই আগস্টের বিপ্লব হয়েছে, আর আজ আমাদের ফারুক হাসানের ওপর হামলা! এটা কোনোভাবেই গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা মেনে নেবে না।সংবাদ সম্মেলনের সময় গণঅভ্যুত্থানে আহত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।প্রসঙ্গত শনিবার দুপুরে ফারুক হাসান জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আয়োজনে শহিদ মিনারে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন। সেখানে দেওয়া বক্তব্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিপ্লবী সরকার না হওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে অভিযুক্ত করার পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সমালোচনা করেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ফারুকের বক্তব্যকে সরকারবিরোধী বক্তব্য দাবি করে সর্বপ্রথম সাইফুল ইসলাম নামে এক হামলাকারী চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে। তখন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নেতাকর্মীরা ফারুক হাসানকে উদ্ধার করে মঞ্চে শহিদ পরিবারের মাঝে বসার ব্যবস্থা করেন। এর আধাঘণ্টা পর ফারুক হাসান তার কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে বিদায় নেন।
তিনি সমাবেশ থেকে বের হওয়ার পরপর সাইফুল, শরীফ, হিল্লোল ও তন্ময়ের নেতৃত্বে ফারুকের ওপর হামলা হয়। এ ঘটনায় মামলার পর রোববার রাতে শরীফ ও হিল্লোলকে গ্রেফতার করা হয়। তবে গ্রেফতারের ১০ ঘণ্টার মধ্যেই জামিন পান তারা।(মাহবুবুল ইসলাম)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *