শেষ হলো ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসব, পুরস্কার পেল যেসব সিনেমা

রুয়ান্ডার গণহত্যার পটভূমিতে ‘কুমভা, উইচ কামস ফ্রম সাইলেন্স’ সিনেমাটি বানিয়েছেন সারাহ ম্যালেগল। ফ্রান্সের এ সিনেমা ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জিতেছে সেরা পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার পুরস্কার। গতকাল বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠান। সেখানেই সেরা সিনেমাসহ অন্যান্য বিভাগে পুরস্কারজয়ী সিনেমার নাম ঘোষণা করা হয়।আর্জেন্টিনা ও জার্মানির যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘আওয়ার ওন শ্যাডো’ সিনেমার জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন অগাস্টিনা এস গেভিয়ার। স্পেশাল অডিয়েন্স পুরস্কার পেয়েছে ফিলিপাইনের সিনেমা ‘দ্য গার্ডিয়ান অব হরর’, সেরা অডিয়েন্স পুরস্কার পেয়েছে সৃজিত মুখার্জির ‘পদাতিক’। মৃণাল সেনের জীবন অবলম্বনে নির্মিত এ সিনেমায় মৃণালের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। উইমেন ফিল্মমেকার বিভাগে স্পেশাল মেনশন পুরস্কার পেয়েছে মলদোভা ও রাশিয়ার যৌথ প্রযোজনা ‘নট জাস্ট এনি ডে’। সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার পুরস্কার জিতেছে পর্তুগিজ সিনেমা ‘মন্তে ক্লেরিগো’। শিশু চলচ্চিত্র বিভাগে বাদল রহমান পুরস্কার জিতেছে রাশিয়ার ‘হয়ার দ্য হোয়াইট ক্রেনস ড্যান্স’।

বাংলাদেশ প্যানারোমার ট্যালেন্ট বিভাগে তিনটি সিনেমাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে মোবারক হোসেইনের পৈতৃক ভিটা, প্রথম রানারআপ আসিফ ইউ হামিদের ‘ফুলেরা পোশাক পরে না’। ফিপ্রেসকি জুরি সেরা সিনেমার পুরস্কার পায় মনন মানতার ‘আ লেজি নুন’। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে সেরা সিনেমার পুরস্কার পেয়েছে শঙ্খ দাশগুপ্তর ‘প্রিয় মালতী’। বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগের পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ফিপ্রেসকি জুরি কর্তৃক।

উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন দিমান জানডি। ইরান ও তাজিকিস্তানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘মেলোডি’ সিনেমার জন্য এ পুরস্কার পেলেন তিনি। ইরানি সিনেমা সামার টাইম-এর জন্য সেরা অভিনেতা হয়েছেন রায়ান সারলাক। এশিয়ান ফিল্ম কম্পিটিশন বিভাগে সেরা চলচ্চিত্রর পুরস্কার জিতে নেয় শোকির খোলিকভের সানডে।

১০টি বিভাগে ৭৫ দেশের ২২০টি চলচ্চিত্র নিয়ে আয়োজন করা হয় এবারের উৎসব। ৯ দিনের উৎসবে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন ৪৪ জন বিদেশি প্রতিনিধি। চীন ও বাংলাদেশের ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক উদ্‌যাপন করতে এবার উৎসবের ওয়াইড অ্যাঙ্গেল বিভাগটি চীনা চলচ্চিত্রের জন্য উৎসর্গ করা হয়। এ ছাড়া জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন করিডরে চীনা চলচ্চিত্র পোস্টার প্রদর্শনী করা হয়। এ ছাড়া ‘সিনেমায় নারী’ সম্মেলন ছিল উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ। উৎসবের ২৩তম আসরে এবার তৃতীয়বারের মতো আয়োজন করা হয় মাস্টারক্লাসের। সমালোচক বিধান রিবেরুর তত্ত্বাবধানে মাস্টারক্লাসটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশসহ সার্বিয়া, চীন ও নরওয়ের চলচ্চিত্রবোদ্ধারা।গতকাল সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মঞ্চে উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনার কথা জানান। যার মধ্যে উৎসবের স্থায়ী ভেন্যু, নির্দিষ্ট বাজেট ও বছরব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা অন্যতম। সমাপনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান, উৎসব কমিটির নির্বাহী সদস্য জালাল আহমেদ। সমাপনী অনুষ্ঠান শুরু হয় জলতরঙ্গ নৃত্যদলের অসাধারণ নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। ইকবাল হোসাইন চৌধুরী পরিচালিত ‘বলী’র প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে পর্দা নামে ঢাকা উৎসবের।(মোঃ আব্দুল বাতেন)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *