রমজান শুরু হতেই ফলের বাজারে উত্তাপ

রমজানের শুরুতেই ফলের বাজারে উত্তাপ। মাল্টা, কমলা, তরমুজ, আঙুর, আনারসের মতো রসালো ফলের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি বেড়েছে ২০-৫০ টাকা। এতে ক্ষোভ বেড়েছে ক্রেতাদের মধ্যে। বাজার তদারকি ছাড়া দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয় বলে মত বিশ্লেষকদের। রমজানে সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে ক্লান্তি মেটানো ও শক্তি ফেরাতে প্রয়োজন হয় ফলের। তাই এ সময় কদর বাড়ে কমলা, মাল্টা, তরমুজ, আঙুরের মতো রসালো ফলের। তবে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ফলের দাম। রোজাদারসহ অনেকের কাছেই এখন দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে রকমারি ফল।রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আপেল ও মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। চীনা কমলা ৩২০, কালো আঙুর ৪৫০, আনার আকার ভেদে ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা এলাকাভেদে গেল এক সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি। অন্যদিকে তরমুজ কেজিতে ৬০, পেয়ারা ১২০ থেকে দেড়শো আর পেঁপে ৮০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আকার ভেদে প্রতি পিস আনারস কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। ক্রেতারা বলেছেন, সব ফলের দাম বেড়েছে। মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তের মানুষরা ফলের কাছে যেতে সাহস পাচ্ছে না।রমজানের প্রথম দিনে রাজধানীর সেগুনবাগিচা, মালিবাগ, রামপুরা ও কারওয়ান বাজারের ফল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে খুচরা পর্যায়ে বিদেশি ফলের দাম বেড়েছে। আমদানি নির্ভর ফলে অতিরিক্ত শুল্কারোপ আর দেশি ফলের অতিরিক্ত চাহিদার কারণে বাড়তি দাম গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এমন দাবি করছেন বিক্রেতারা।

ঢাকা মহানগর ফল আমদানি-রপ্তানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুল করিম জানান, একদিকে ডলারের দাম বেশি। শুল্কায়নের ক্ষেত্রেও কিছু জটিলতা আছে। বাজারে এসবের প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার একদফা শুল্ক-ভ্যাট বাড়িয়েছে। বিদেশি ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।

বিক্রেতারা বলছেন, আমদানিতে খরচ বেশি হওয়ায় দাম বেড়েছে। একই সঙ্গে রোজায় সবাই কমবেশি ফল কেনেন। ফলে চহিদার সঙ্গে সঙ্গে দামও বেড়ে যায়।দামের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে শরবতের অন্যতম উপকরণ লেবু। আকার ভেদে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ২০০ টাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রমজানের মধ্যে ফলের দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিং এর ব্যবস্থা রাখতে হবে প্রশাসনের।

অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় যে টাস্কফোর্স রয়েছে , তারা কিন্তু গ্রাম থেকে জেলা সদর পর্যায়ে কাজ করছে। এ টাস্কফোর্স পণ্যের দাম নিয়ে বাজারে মনিটরিং করতে পারেন। যেখানে অযৌক্তিকভাবে দাম বেড়ে যাওয়া চোখে পড়বে সেখানে অভিযান চালাতে হবে।

প্রতিবছর রোজার আগে আগে রসালো ফলের এমন দাম বাড়ায় ক্ষোভ ক্রেতাদের মনে। সবার আশা, সরকারি হস্তক্ষেপে কমে আসবে অযৌক্তিক দাম।(মাহমুদুল হাসান)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *