বর্ণাঢ্য ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টেনেছেন মুশফিকুর রহিম। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি অবসরের ঘোষণা দেন। এর আগে টি-টোয়েন্টি থেকেও অবসর নিয়েছেন তিনি। এ ঘোষণার পরদিন আজ বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ম্যাচে ‘তাকে গার্ড অন অনার’ দেন সতীর্থরা।প্রিমিয়ার লিগে আজ মুশফিকের মোহামেডান খেলছে রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে। এ ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় মোহামেডান। উইকেটকিপার মুশফিক প্যাড-গ্লাভস পরে মাঠে নামার সময় সতীর্থদের কাছ থেকে গার্ড অব অনার পেয়েছেন।ম্যাচ শুরুর আগে দুই সারিতে দাঁড়ান মোহামেডানের ক্রিকেটাররা, মাঝখান দিয়ে মাঠে নামেন মুশফিক। এখানেও অবশ্য জাতীয় দলের কয়েকজন সতীর্থকে পাশে পেয়েছেন। দীর্ঘদিনের সতীর্থ তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান মিরাজও খেলছেন মোহামেডানের হয়ে। গার্ড অব অনারের সময় তারা সবাই ছিলেন।
এদিকে, ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়ার পর ভিডিও বার্তায় মুশফিককে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানান তামিম ইকবাল। জাতীয় দলে ১৬ বছর সতীর্থ হিসেবে খেলেছেন দুজন। মুশফিককে ধন্যবাদ জানিয়ে তামিম বলেন, ‘আজকে এমনই একটা দিন, সাধারণত কেউ যদি কোনো সংস্করণ থেকে অবসর নেয়, সবাই স্ট্যাটাস দেয়, তাদের অনুভূতিটা বোঝায়। কিন্তু এমন একজন ব্যক্তি আজ অবসর নিলেন, যার সঙ্গে আমার ২০-২৫ বছরের অভিযাত্রা। একটা স্ট্যাটাসে আমি আসলে বোঝাতে পারতাম না, তার প্রতি আমার অনুভূতি কেমন এবং এখন আমার আসলে কেমন মনে হচ্ছে। আপনারা সবাই জানেন মুশফিক কিছুক্ষণ আগে ওয়ানডে থেকে অবসর নিয়েছে। মুশফিককে আমি এতটুকুই বলতে চাই যে দোস্ত, তোর সঙ্গে আমার খেলার শুরু অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে এবং আমি তোকে ধাপে ধাপে বেড়ে উঠতে দেখেছি। তোকে দেখেছি যে সাধারণ ব্যাটসম্যান থেকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছিস। অনেকেরই তার কঠোর পরিশ্রমটা দেখার সুযোগ হয়নি। আমি দেখেছি যে একটি ছেলে কত কষ্ট করতে পারে। একটা মানুষের পক্ষে যতটা কষ্ট করা সম্ভব, আমার কাছে মনে হয় যে সে সবই করেছে, এখনো করে যায়। আমরা এটা নিয়ে অনেক সময় হাসাহাসি করি যে একটা মানুষ এত কষ্ট করে কেন। কিন্তু তার নিবেদন, খেলার প্রতি ভালোবাসা, এটা বিশাল। এটা আমি কথায় কোনো দিন কাউকে বোঝাতে পারব না। খেলা ছেড়ে দেয়া ওর জন্য কত কষ্টকর, আমি যেহেতু ওর কাছের একজন বন্ধু, আমি বুঝতে পারি যে এটা তার জন্য খুব খুব কঠিন।’
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২৭৪টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন মুশফিক। ৩৬.৪২ গড়ে ৭ হাজার ৭৯৫ রান করেছেন মুশফিক। সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৩৫৭ রান করেছেন তামিম, যিনি ম্যাচ খেলেন ২৪৩টি।(মোঃ মিছবাহ উদ্দিন)